করোনা ভাইরাস: আত্মসচেতনতার বিকল্প নেই।। এ টি এম আশরাফুল ইসলাম সরকার রাংগা
এ টি এম আশরাফুল ইসলাম সরকার রাংগাঃ
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার অনলাইন ভার্সন, ইন্টারনেট, সামাজিক ও গণ-যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব সহ নানা রকম পথে আসা করোনা ভাইরাসের নিউজগুলো খুব গুরুত্ব সহকারে পড়ছি এবং করোনার সর্বশেষ খবর রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারণ, এটাই সত্যি যে আমি নিজেও বেশ খানিকটা করোনা (কোভিড-১৯) আতঙ্কে আছি। এইসব মাধ্যমগুলো বেশ ফলাও করে যতœসহকারে করোনা ভাইরাসের আপডেট নিউজ, উপসর্গ, প্রতিকারে করণীয় এবং গণসচেতনতামূলক বিষয়গুলো বিশদভাবে তুলে ধরছে। কেউ কেউ আবার ঘরে বসে কীভাবে সুস্থ্য থাকা যায়, এ সংক্রান্ত প্রাথমিক চিকিৎসার পথটাও বাতলিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে করোনাকে নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে এর ভয়াবহতার কথা শুনিয়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকেই এ সংক্রান্ত সু-খবর দিয়ে বাংলাদেশের সাধারন মানুষদের মন থেকে করোনা আতঙ্ক দূর করে দিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। যেমন, কোনো কোনো মাধ্যম সুখবর দিচ্ছেন এভাবে যে বাংলাদেশে বর্তমান যে আবহাওয়া বিরাজমান আছে, তাতে করে করোনা ভাইরাস খুব বেশি একটা ছড়াতে পারবেনা। কারণ, করোনা ভাইরাস নি¤œ তাপমাত্রা অঞ্চলেই নাকি বেশি ছড়ায়। অনেকে আবার এটাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এমন কথার কোনো ভিত্তি নেই। বাংলাদেশের তাপমাত্রা সর্বনি¤œ ৬-১০ ডিগ্রী থেকে সর্বোচ্চ ৩৬-৩৮ ডিগ্রী। কিন্তু করোনা ধ্বংশ করতে লাগে কমপক্ষে ৭০ ডিগ্রী তাপমাত্রা; যা কখনই কোনো দেশের সাধারন মানুষ বা জীব বৈচিত্রের বেঁচে থাকার জন্য সহনীয় তাপমাত্র নয়। অতএব তাদের মতে এটা ভিত্তিহীন।
যেহেতু কোভিড-১৯ ভাইরাসটি মারাত্মক ছোঁয়াচে, তাই হোম কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন বা সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিয়েছেন কেউ কেউ। এতে করে ভাইরাসটি আবদ্ধ হয়ে থাকতে পারবে। বাহিরে ছড়াতে পারবেনা। কিন্তু অনেকে এটার বিপক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছেন। অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন- ‘ সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে একজন অন্যদের পৃথক হয়ে থাকতে হয়। আমাদের গ্রামের বাড়িতে এমন সুবিধা সম্ভব নয়। ফলে এধরনের কোয়ারেন্টাইন থাকা লোকজন সমাজের জন্য ঝুঁকির কারণ হবে। নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনের এ পদ্ধতিটি সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকৃত অর্থে কোনো একজনকে যথাযথ সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে রাখার কোনো পদ্ধতি নেই।’ তিনি আরও বলেন- ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কোনো হাসপাতাল করাও উচিত নয়। কারণ, এখান থেকে অন্য রোগী অথবা তাদের স্বজনদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন স্থানে কোয়ারেন্টাইন করা উচিত হবেনা, যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের আসা-যাওয়া আছে। এমনকি পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও যেখানে যাবেন সেখানেও কোয়ারেন্টাইন করা উচিত নয়।’
আবার কিছু কিছু মাধ্যমে এসেছে- গরম পানির সাথে লবণ মিশিয়ে গার্গল করলে এবং বেশি বেশি করে পানি পান করলে এর থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এখানেও বেশ কিছু চিন্তাবিদ যুক্তি দেখিয়েছেন। তারা বলেছেন- এটা করোনা ভাইরাসের জন্য কোনো কাজেই আসবেনা। তবে বেশি বেশি করে পানি পান করা শরীরের জন্য ভালো; কিন্তু এতে করোনা ভাইরাসের উপকার হবে, এটা ভিত্তিহীন।
অনেকে আবার ভাইরাস নিরাময়ে আধ্যাত্মিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কোনো এক পীর সাহেব নাকি স্বপ্নে দেখেছেন, ৩ টি করে থানকুনি পাতা খেলে করোনা সারবে। আর এই গুজবে কান দিয়ে গভীর রাত থেকে স্বজনরা দূরে থাকা স্বজনদের ফোন করে বিষয়টি জানান। এ কারণে কোথাও কোথাও থানকুনি পাতা খেতে মাইকিং পর্যন্ত করা হয়েছে। এটাকে পুরো বানোয়াট মনে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফরহাদ হোসেন বলেছেন- থানকুনি পাতা খেলে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত পাওয়া যাবে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। চীন হারবাল চিকিৎসায় অনেক সমৃদ্ধ। তাই এভাবে যদি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যেত তাহলে চীন অনেক আগে থেকেই এটার ব্যবহার শুরু করত। এধরনের গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও আইইডিসিআর কর্তৃক যে পরামর্শগুলো এসেছে সেগুলো খানিকটা এরকম- জনবহুল স্থানে মাস্ক ব্যবহার করা, খাবারের আগে কিংবা কাউকে স্পর্শ করলে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ভালোভাবে পরিস্কার রাখা, রান্নার আগে খাবার ভালো করে ধোয়া ও তা পুরোপুরি সেদ্ধ নিশ্চিত করা, হ্যান্ডশেক বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকা, ভিড় এড়িয়ে চলা, হাঁচি-কাশির সময় রুমাল অথবা টিস্যু অথবা হাতের উল্টো পিঠ ব্যবহার করা, খুব সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা এবং আইইডিসিআর প্রদত্ত হটলাইন নাম্বারসমূহে ফোন করা ইত্যাদি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনসমাবেশ এড়াতে দেশের সরকারী -বেসরকারী স্কুল কলেজ, সিনেমা রেস্তোরাঁ, গণপরিবহন, বিমান চলাচল, কোচিং সেন্টার, সিনেমা হল, সামাজিক অনুষ্ঠান, দর্শনীয় স্থান এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অত্যন্ত স্বল্প পরিসরে ঘরোয়াভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত ২১ মার্চ বিকেল পাঁচটায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণ ও বর্তমান অবস্থার কথা বিবেচনা করে এ বছর ২৬ মার্চ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠান এবং বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিতব্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা বিতরণ অনুষ্ঠানও বাতিল করেছেন। বিভিন্ন ধরনের পাবলিক পরীক্ষাসহ প্রতিযোগিতামূলক অন্যান্য পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসকে গেজেট হিসেবে মহামারি হিসেবে চিহ্নিত করার তাগিদ দিয়েছে কোর্ট। দেশের বিপজ্জনক স্থান সমূহ চিহ্নিত করে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া সহ মানুষ জনের চলাচলের ওপর কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। প্রয়োজনে দেশ জরুরী অবস্থা ঘোষণারও সিদ্ধান্ত রাখা হয়েছে। এর সবকিছু করা হয়েছে শুধুমাত্র ভীড় এড়িয়ে চলার জন্য। অথচ আমরা সেই ভিড়ের দিকেই যাচ্ছি।
ভেবে নিলাম সবার পরামর্শই ঠিক আছে। কিন্তু আমরা কোন পথে যাব। আমরা কোন পরামর্শটি গ্রহণ করব। এতদিন তো ভেবেছিলাম ভালোই আছি। আক্রান্ত তিনজন রোগীর মধ্যে দুইজন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এর চেয়ে আর সুখবর আমাদের জন্য কী হতে পারে? কিন্তু যখন আইইডিসিআর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সরাসরি প্রেসব্রিফিং এ সর্বশেষ (২৯/০৩/২০২০ খ্রী: তারিখ পর্যন্ত) পরিসংখ্যানে জানতে পারলাম, প্রথম ০৩ জন থেকে বেড়ে এখন পর্যন্ত মোট ৪৮ জন সংক্রমিত হয়েছে এবং অপর ০৫ জনের মৃত‚্য ঘটেছে, তখনি আঁতকে উঠেছি। আক্রান্তদের মধ্যে বাকী কয়েকজনর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভয়টা তখন থেকেই মনের ভেতর দানা বেঁধেছে। এর চেয়ে আর দুঃসংবাদ কী হতে পারে! তবে সু-সংবাদ হচ্ছে- গতকাল অর্থ্যাৎ ২৮/০৩/২০২০ খ্রী এবং ২৯/০৩/২০২০ খ্রীঃ তারিখ পর্যন্ত কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়নি। অপরদিকে ১৫ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অবশ্য মৃত্যূর কারণ হিসেবে আইইডিসিআর জানিয়েছে যে মারা যাওয়া ব্যক্তি যুক্তরাস্ট্র প্রবাসীর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি আক্রান্ত ১০ জনের একজন ছিলেন। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মৃত্যূবরণকারী ব্যক্তিদের বয়স ৭০ বছরের বেশি ছিল। তারা উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি এবং ডায়াবেটিকস সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। ্ওনারা হয়ত ‘মরিয়া বাঁচিয়াছেন’, কিন্তু ‘আমরা কি বাঁচিয়া মরিব!’
যাই হোক, বিভিন্ন মাধ্যমে যে সকল পরামর্শ ও যুক্তিতর্ক এতক্ষণ আলাচনা করলাম তার সারকথা হলো- কোভিড-১৯ আমাদের ঘরে ঢুকেছে এবং একে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার দায়িত্বও আমাদের। এর আগে আমরা এইড্স(এইচআইভি), নিপা, বার্ড ফ্লু, সোইন ফ্লু এবং করোনার চেয়েও মারাত্মক যেটি ছিল তা হলো ইবোলা ভাইরাস; সেটির পর্যন্ত মোকাবেলা করেছি। ইনশাল্লাহ্ করোনাকেও জয় করতে পারব। দরকার শুধু সচেতনতা। আপনি আমি সচেতন না হলে এটি বাড়তেই থাকবে। আর এজন্য কাউকেই দায়ী করতে পারবনা; করলেও বোধ করি সমীচীন হিসেবে গণ্য হবেনা। কারণ আপনার আমার, আমাদের পরিবারের সুস্থতার খবর আমারা রাখবনা তো কে রাখেবে। সামান্য জ¦র কিংবা কাশিতে অথবা পেটের পীড়ায় আপনি যখন ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হন, তখন প্রেসক্রিপশন আর ঔষধের সাথে উনি কিছু বিধি-নিষেধের পরামর্শ দেন। আমরা তো সেগুলো মোস্ট অবিডিয়েন্ট পার্সনের মত মেনে চলি। অথচ ওটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্ত এখানে জীবন-মরণের প্রশ্ন, দেশের প্রশ্ন, পরিবার আর সমাজের হুমকির প্রশ্ন; তাহলে কেন আমরা এই পরামর্শগুলো মানবনা বা মানতে চাইবনা? আপনার একগৃঁয়ে মনোভাবটা দয়া করে পরিহার করুন। করোনা ভাইরাস নিয়ে কারো সাথে তর্কে না জড়িয়ে পরামর্শ গ্রহন করুন। একবার ভেবে দেখুন, ইরান, ইতালী, স্পেন, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, তাইওয়ান, নিউজিল্যান্ড, ভারত সহ আরো অনেক দেশ যেগুলোকে বিশে^র উন্নত রাস্ট্র হিসেবে গণ্য করা হয়। অথচ করোনা মোকাবেলায় এরা কতটাই হিমশিম খাচ্ছে! এদের মত রাস্ট্রে লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারাও যাচ্ছে অনেক। আমরা কিন্তু এদেশ গুলোর তুলনায় তেমন কিছুই নই। এদের মত ্আমাদের উন্নত প্রযুক্তি নেই, চিকিৎসা সেবা নেই। নেই উচ্চ মানের হাসপাতাল। তাহলে আমাদের অবস্থা কী হতে পারে! এখনই তো জ¦র, সর্দি, কাশি জনিত রোগীদের কোভিড-১৯ সন্দেহে হাসপাতাল থেকে ফেরত দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া এখন থেকে আগামী দুই-তিন সপ্তাহ দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সামাজিকভাবে নতুন করোনা ভাইরাস পড়ার শঙ্কা আছে। লকডাউনের আগ পর্যন্ত যারা আক্রান্ত দেশ থেকে এসেছেন তাদের মাধ্যমে ছড়ালেও সর্বোচ্চ ২১ দিনের মধ্যেই তা প্রকাশ পাবে। ভাইরোলজির ভাষায় যাকে “পিক টাইম” বলা হয়। আসুন, এই সময়টুকু সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে ব্যয় করি। এখনও অনেক দিন বাকী আছে। যত কষ্টই হোক না কেন, শেষটা আমদেরকেই সামলে নিতে হবে। নইলে আত্মসমর্পণ করতে হবে এই করোনার কাছে। কিন্তু আমরা তো সেই জাতি নই। বাঙালি বীরের জাতি। আমাদের বিজয়ের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। আসুন সেই ইতিহাসকে কাজে লাগিয়ে শত্রæর মোকাবেলায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই। করোনাকে চিরতরে এদেশ থেকে বিদায় করার কার্যকরী ব্যবস্থা নেই।
মার্চ স্বাধীনতার মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে শত্রæর হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। আমরা সকল বাঙালি একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে শত্রæমুক্ত করেছি। তবে সেটা ছিল ঘরের বাহিরের যুদ্ধ। এক-একটি বাঙালি সন্তান অস্ত্র সমেত তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই মার্চ মাসেই আমাদের সামনে যেন আরেকটা যুদ্ধ অপেক্ষা করছে। সেটা হচ্ছে করোনা মুক্ত বাংলাদেশ। এ যুদ্ধটা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আর এ যুদ্ধটা করতে হবে ঘরের ভেতরে অবস্থান করে কঠিন ধৈর্য্যরে পরীক্ষা দিয়ে। এ যুদ্ধের অস্ত্র হচ্ছে নিজে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, অপরকে পরিস্কার রাখার ব্যবস্থা বা পরামর্শ দেয়া, স্বাস্থ্যবিধিগুলো সঠিকভাবে মেনে চলা। সকল বাঙালি মিলে এ যুদ্ধের মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশকে করোনার প্রকোপ থেকে স্বাধীন করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নর-নারী, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবণিতা এ যুদ্ধের এক-একজন র্সূর্য সৈনিক। এ যুদ্ধে কাউকে খাটো করে দেখার ফুরসত নেই। সবাইকে এর প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং প্রয়োজনে দিতেও হবে। আমরা বীরের জাতি। কখনও মাথা নোয়ায়নি। ইনশাল্লাহ্ এ যুদ্ধেও আমরা পরাজয় শিকার করবনা। আমাদের জানা আছে-“সাবাশ বাংলাদেশ! বিশ^ অবাক তাকিয়ে রয়, জ¦লে-পুড়ে ছাড়খাড়, তবুও মাথা নোয়াবার নয়।”
তাই নিজে সচেতন থাকুন, অপরকেও এ বিষয়ে সচেতন করুন। গুজব ছড়াবেন না এবং নিজেও গুজবে কান দেবেন না। কারণ, তথ্য প্রযুক্তির যূগে তথ্য যেমন সহজলভ্য হয়েছে, তেমনি সহজ হয়েছে গুজব নামক ভয়াবহ বিষয়টি। বিশ^স্ত জায়গাগুলো (লিংক) থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে সেই মতে চলাফেরা করুন। নিজ-নিজ ¯্রস্টার কাছে প্রার্থনা করুন। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। দেখবেন, আপনি আমি সেই আগের মতই আছি ইনশাল্লাহ। পূর্ব দিগন্তে সবুজের বুক চিড়ে আবার উদিত হবে টকটকে লাল সূর্য। মাঠে মাঠে শুরু হবে কোলাহল। কৃষকের কণ্ঠে আবার জাগবে গান। বাংলার সকল মানুষ যাবে তার কর্মক্ষেত্রে। প্রাণচাঞ্চল্যতা পাবে ঝিমিয়ে যাওয়া শহর। শিক্ষার্থীরা বই হাতে আবার ফিরবে বিদ্যালয়ে। খুলে দেয়া হবে বাংলাদেশের সমস্ত সৌন্দর্যের দ্বার। সকল আতঙ্ক, হতাশা আর উৎকণ্ঠা পেরিয়ে আবার সচল হবে আমার সোনার বাংলা। আবার আমরা এক অপরের বাড়িতে যেতে পারব, হাতে হাত মেলাতে পারব, সবাই মিলিত হতে পারব বন্ধুত্বের কঠিন বন্ধনে। দরকার শুধু একটু সচেতনতাবোধ।
সবশেষে মনে রাখবেন, যেহেতু এ রোগের এখনও কোনো প্রতিষেধক আবিস্কার করে বাজারে ছাড়া হয়নি (যদিও চীনের মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জাপানে নতুন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধের করোনা ভাইরাস রোগীর চিকিৎসায় কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে)- সেহেতু আমরাই এর প্রতিষেধক, এর চড়া এন্টিবায়োটিক। মনে রাখবেন- জীবন আমার, জীবনের দায়িত্ব আমার।
কোন মন্তব্য নেই