কর্মীবান্ধব ও জনবান্ধব নেতা !!!!
লিখেছেনঃ সিাজুল ইসলাম । Sirajul Islam
—————————----------------------—-
করোনা মহামারীর সময়ে কর্মীবান্ধব শব্দের প্রচার ও প্রসার নিয়ে প্রায় সকল মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে,কর্মীবান্ধব নেতা চাই, যিনি কর্মীদের সুখে দুঃখে নিজেকে সপে দিবেন, তিনি আদর্শ নেতা। কর্মীদের এমন নেতাই চাই। আবার নেতারও সকল কর্মসুচীর সঠিক বাস্তবায়ন, প্রচার ও প্রসারে কর্মীদের বিকল্প নাই।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রাজনৈতিক নেতার সবচেয়ে বড়গুন হিসেবে কর্মীবান্ধব শব্দের ব্যবহার হচ্ছে। কর্মীদের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মীবান্ধব নেতাই তাঁদের ভরসাস্থল।
—————————----------------------—-
করোনা মহামারীর সময়ে কর্মীবান্ধব শব্দের প্রচার ও প্রসার নিয়ে প্রায় সকল মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে,কর্মীবান্ধব নেতা চাই, যিনি কর্মীদের সুখে দুঃখে নিজেকে সপে দিবেন, তিনি আদর্শ নেতা। কর্মীদের এমন নেতাই চাই। আবার নেতারও সকল কর্মসুচীর সঠিক বাস্তবায়ন, প্রচার ও প্রসারে কর্মীদের বিকল্প নাই।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রাজনৈতিক নেতার সবচেয়ে বড়গুন হিসেবে কর্মীবান্ধব শব্দের ব্যবহার হচ্ছে। কর্মীদের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কর্মীবান্ধব নেতাই তাঁদের ভরসাস্থল।
আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় অনেক জনপ্রিয় নেতা আছেন। এই জনপ্রিয়তার নানা কারণ আছে। কেউ কেউ আছেন, চুরি চামারি করলেও এলাকাবাসীর সঙ্গে থাকেন। নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করেন।
কেউ বা আবার এলাকার টাউট,বাটপাড়,গুণ্ডা,বদমাশগুলোকে হাতে রাখেন। নিয়মিত তাদের জন্য খরচ করেন। এলাকার মানুষ এটা জানে বলে তার প্রতি এক ধরনের সমর্থন ব্যক্ত করেন। প্রশংসা না করলে যদি তার লোকেরা ঠ্যাঙানি দেয়, সেই ভয়ে।
কেউ বা আবার এলাকার টাউট,বাটপাড়,গুণ্ডা,বদমাশগুলোকে হাতে রাখেন। নিয়মিত তাদের জন্য খরচ করেন। এলাকার মানুষ এটা জানে বলে তার প্রতি এক ধরনের সমর্থন ব্যক্ত করেন। প্রশংসা না করলে যদি তার লোকেরা ঠ্যাঙানি দেয়, সেই ভয়ে।
আবার এমন কিছু নেতা আছেন যারা (লোক দেখানো হলেও) গরিবের কিছু উপকার করেন। গুণ্ডা,বদমাশগুলোকে প্রকাশ্যে ধমক টমক দেন। মালপানি কামালেও একটু রাখঢাক করে চলেন। কর্মীদের মনোরঞ্জন করে চলার চেষ্টা করেন। এতেও তিনি জনপ্রিয় তকমা পান।
কিন্তু এলাকায় একজন জনপ্রিয় নেতা যে সত্যিকার অর্থেই সৎ এবং ভালো মানুষ, জনকল্যাণে কাজ করেন, মানুষকে আঘাত করেন না ,কোনকিছুর লোভ নেই এরকম আমাদের দেশে একেবারেই বিরল।
তাহলে আলোচনা করা যায় যে,আমরা কেমন নেতা চাই।
তিনি কি কর্মীবান্ধব হবেন ?
না জনবান্ধব হবেন ?
নাকি দলবান্ধব হবেন?
না জনবান্ধব হবেন ?
নাকি দলবান্ধব হবেন?
কর্মীবান্ধব নেতা বলতে মানুষ বুঝে থাকে, যে নেতা-কর্মীর তদ্বিরে সাড়া দেন, তার আপদে-বিপদে যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। এতে নিয়ম নীতি ভাঙল কি মচকালো তাতে কিছু যায় আসে না। তর্কের খাতিরে ‘তদ্বির’কে আমরা যদি ইতিবাচক অর্থেও ধরে নিই তাহলে আমাদের জানা দরকার দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে কর্মীর সংখ্যা কতো হতে পারে?
আমরা যদি আওয়ামী লীগকেই ‘স্যাম্পল’ হিসেবে নিই, তাহলে দেখব, সারা দেশে সাড়ে চার হাজারের বেশী ইউনিয়ন আছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে আবার ৯টি ওয়ার্ড। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ওয়ার্ড পর্যন্ত বিদ্যমান অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটিও সক্রিয় আছে।
প্রত্যেক ইউনিয়নে যদি কম করে হলেও আওয়ামী লীগের ১০০ জন সক্রিয় কর্মী আছে বলে ধরে নিই, তাহলে একজন জেলা নেতার পক্ষে কি কয়েক হাজার কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সম্ভব?
তাহলে কি একজন নেতা চাইলেই কর্মীবান্ধব হতে পারেন না ?
অবশ্যই পারবেন যদি তিনি সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন এবং একটু পরিশ্রম করেন। কারন সকলেইতে জেলা নেতার কাছে যাবেন না। তৃণমুল থেকে জেলা পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড যদি ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই সকল কর্মীর দায়িত্ব নেয়া সম্ভব।
কিন্তু নেতৃত্বের দুর্লতা এবং নতুন নেতৃত্বের বিকাশ যাতে না ঘটে সেই চেষ্টা বা মানষিকতা কাজ করে বিধায় চেইন অব কমান্ড ভংগ করে তারা গ্রুপিং তৈরী করেন, ফলে কর্মীর ঝামেলা কমে যায় এবং কোটারী গ্রুপ তৈরী হয়। নেতা ঝামেলা মুক্ত হলেন আর কর্মীরা হারালেন কর্মীবান্ধব নেতাকে।
ফলে কর্মীবান্ধব নেতা পাওয়া যায় না।
প্রত্যেক ইউনিয়নে যদি কম করে হলেও আওয়ামী লীগের ১০০ জন সক্রিয় কর্মী আছে বলে ধরে নিই, তাহলে একজন জেলা নেতার পক্ষে কি কয়েক হাজার কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা সম্ভব?
তাহলে কি একজন নেতা চাইলেই কর্মীবান্ধব হতে পারেন না ?
অবশ্যই পারবেন যদি তিনি সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেন এবং একটু পরিশ্রম করেন। কারন সকলেইতে জেলা নেতার কাছে যাবেন না। তৃণমুল থেকে জেলা পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড যদি ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই সকল কর্মীর দায়িত্ব নেয়া সম্ভব।
কিন্তু নেতৃত্বের দুর্লতা এবং নতুন নেতৃত্বের বিকাশ যাতে না ঘটে সেই চেষ্টা বা মানষিকতা কাজ করে বিধায় চেইন অব কমান্ড ভংগ করে তারা গ্রুপিং তৈরী করেন, ফলে কর্মীর ঝামেলা কমে যায় এবং কোটারী গ্রুপ তৈরী হয়। নেতা ঝামেলা মুক্ত হলেন আর কর্মীরা হারালেন কর্মীবান্ধব নেতাকে।
ফলে কর্মীবান্ধব নেতা পাওয়া যায় না।
জনবান্ধব হওয়া তো আরও কঠিন। কারন সকল জনগনের কথা শোনা বা তাদের বিপদে সাড়া দেওয়া সত্যই অনেক দুরহ কাজ। নেতা নিজেই বা চাটুকারদের জন্য জনবান্ধব হতে চান না।
তারা যেটা পারেন এবং করেন সেটা হলো দলবান্ধব হওয়া। এতে খুব বেশি কষ্ট নেই। কর্মীদের দেন দলের দোহাই, আর দলকে দেন কর্মীদের দোহাই।
এভাবে উভয় স্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে সে কেবল নিজের আখের নিয়েই ব্যস্ত থাকতে পারেন।
এভাবে উভয় স্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে সে কেবল নিজের আখের নিয়েই ব্যস্ত থাকতে পারেন।
কিন্তু এমন নেতা দিয়ে কি আমাদের সমাজকে এগিয়ে নেয়া যাবে?
রাজনৈতিক চাটুকারিতা ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব হবে?
মনে রাখা দরকার যে, রাজনীতির সঙ্গে ‘নীতি’ কথাটা যুক্ত আছে। নীতি হলো কিছু আদর্শ নিয়ম-কানুন। অতীতে আমরা দেখেছি যারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, তারা নীতি-নৈতিকতার চর্চা করেছেন। রাজনীতিবিদদের মানুষ শ্রদ্ধা করত। তাদের কথায় জীবন উৎসর্গ করতেও দ্বিধা বোধ করত না। রাজনীতি ছিল এক সময় দেশ ও মানুষের সেবা করার সবচেয়ে উত্তম পন্থা। যারা রাজনীতির খাতায় নাম লেখাতেন তারা আত্মস্বার্থ কখনো বিবেচনায় রাখতেন না। দেশ-জাতি, মানুষের কল্যাণই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তারা জাতির কল্যাণ সাধনায় ব্রতী হয়ে নিজেদের দিকে তাকানোর সময় পেতেন না। জনগণের স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে চলতেন সব ধরনের ভয়ভীতি, লোভ লালসাকে উপেক্ষা করতেন।
আর এখন?
গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতার গুণ-কীর্তন প্রচার করা নেতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃত অর্থে হোক এটা গুন বা বেগুন। কারন প্রচারেই যেন প্রসার।
দেশ-জাতি এসব শব্দ আজকের নেতাদের ক’জনের মস্তিষ্কে বাসা বাঁধতে পেরেছে তা গবেষণার বিষয় হতে পারে। উপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত সবখানে একই ধারা চলছে বছরের পর বছর ধরে।
নিচু পর্যায়ের নেতারা ব্যস্ত হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তার সবটা উদরস্থ করে ফুলে ফেঁপে ইদুর থেকে হাতি হতে চায়।
আর যারা রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে, তারা অপেক্ষায় আছে কবে ক্ষমতার সোনার হরিণ ধরা দেবে, যা তাদের ভাগ্য খুলে দেবে। এ জন্য তাদের ছলনা ও কৌশল প্রয়োগের কোনো শেষ নেই।
আর যারা রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে, তারা অপেক্ষায় আছে কবে ক্ষমতার সোনার হরিণ ধরা দেবে, যা তাদের ভাগ্য খুলে দেবে। এ জন্য তাদের ছলনা ও কৌশল প্রয়োগের কোনো শেষ নেই।
রাজনীতির সঙ্গে নেতা ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। নেতা ছাড়া রাজনীতি কল্পনা করা যায় না। যাদের হাত ধরে নীতি প্রণয়ন হয়, প্রতিষ্ঠিত হয়, নীতির প্রচার ও প্রসার হয়, তাদের মধ্যেই আজ নীতি ও নৈতিকতা নির্বাসিত প্রায়। আজকে রাজনীতির মাঠে নীতিহীন নেতার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
ম্যাকিয়াভেলি বলেছিলেন, রাজাকে মিথ্যা বলতেই হবে, তাকে অভিনয় করে হলেও দেখাতে হবে যে তিনি প্রজাবৎসল। প্রজাদের শোকে তিনি মুহ্যমান, এই ধারণা রাজাকে জনপ্রিয় করবে। অর্থাৎ রাজাকে জনপ্রিয় হতে হবে। রাজা বা রাজনীতিকদের এই জনপ্রিয় হওয়ার ধারা এখনও চলছে।
যদিও ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে চাণক্য রাজনীতি সম্পর্কে ভিন্ন কথা বলেছিলেন। তিনি নৈতিকতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন অনেক বেশি। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, রাজাকে সৎ হতে হবে। অসত্য অন্যায়ের মাধ্যমে রাজধর্ম পালন হবে না। রাজা শক্তিশালী হবে না।
আমরা বর্তমানে যে সব নেতা দেখছি, তাদের অনেকেই জনপ্রিয় নেতা হচ্ছেন বটে, কিন্তু সেই অর্থে ভালো বা যোগ্য নেতা হচ্ছেন কি?
সততা, বুদ্ধি, বিচারক্ষমতা, মতামত বা নানান মতামত সংগ্রহের ইচ্ছা, তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা, ভালো স্মৃতিশক্তি, সাহস, দূরদর্শিতা, সীমাহীন উৎসাহ এবং চিন্তাভাবনায় কট্টর না হয়েও আধুনিক ও নমনীয় হওয়া ইত্যাদি অবশ্যই ভালো নেতৃত্বের গুণাবলীর মধ্যে পড়ে।
আমাদের দেশে এই সময়ে শুধুমাত্র একজনের মধ্যেই এই সকল গুণাবলী বিদ্যমান।
আমাদের দেশে এই সময়ে শুধুমাত্র একজনের মধ্যেই এই সকল গুণাবলী বিদ্যমান।
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ বলছেন, নেতার গ্ল্যামার, ক্যারিসমা, জনপ্রিয় জনমোহিনী শক্তি, যাই হোক না কেন আসলে নেতৃত্ব শক্তিশালী হতে পারে একমাত্র যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমেই। অন্যের মত ধারণ করা এবং সকলের কল্যাণে ভূমিকা পালন করা।
আমরা কি এমন নেতাকে নির্বাচিত করেছি ?
নির্বাচনে বিপুল ভাবে জিতলেই এক জন নেতা বা নেত্রী মনে করেন যে, তিনি যোগ্য, সফল এবং শক্তিশালী নেতা। কিন্তু সেটা এক মস্ত বড় ভুল। জয়লাভ করা মানেই কিন্তু ভালো নেতা হওয়া নয়।
হিটলারও তার জাতীয়তাবাদী সমাজতন্ত্রী দলের পক্ষে পেয়েছিলেন এক বিপুল জনসমর্থন। জনপ্রিয় হওয়া আর যোগ্য হওয়া এক কথা নয়।
সত্যিকারের নেতা হতে হলে কর্মীবান্ধব,জনবান্ধব এবং দলবান্ধব তিনটি গুনই থাকা অবশ্যক।
জননেত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে এই তিনটি গুনই প্রবলভাবে বিদ্যমান। যে নেতারা প্রতিটি নিশ্বাসে নেত্রীর কথা জোরে জোরে উচ্চারণ করেন,নেত্রীর জন্য জান কোরবান করেন কিন্তু সত্যিকার অর্থে নেত্রীকে ধারন করেন কি?
কর্মীরাই সত্যিকার অর্থে নেত্রীকে লালন ও ধারন করেন।
দেশ , জাতি ও দলের মংগলের জন্য কর্মীবান্ধব,জনবান্ধব ও দলবান্ধব নেতৃত্বের বিকল্প নাই। তাই আমরা সকল ক্ষেত্রে এমন নেতৃত্ব চাই।
কর্মীরাই সত্যিকার অর্থে নেত্রীকে লালন ও ধারন করেন।
দেশ , জাতি ও দলের মংগলের জন্য কর্মীবান্ধব,জনবান্ধব ও দলবান্ধব নেতৃত্বের বিকল্প নাই। তাই আমরা সকল ক্ষেত্রে এমন নেতৃত্ব চাই।
কোন মন্তব্য নেই